Wednesday 26 August 2015

নানা ধরণের ভাবনা চিন্তা ও কাজের মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের আতঙ্কের দেয়াল শীর্ষক গেইল তুরিনের চিত্র সাংবাদিকতার বইটির অনুবাদ-কাজটিকে ভুলে গিয়েছিলাম।ভুমিকাটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আর ৬২টি সাদাকালো ছবির ভাষ্য-অনুবাদ শেষ না হওয়া ইস্তক অন্য কাজ বন্ধ।আতঙ্কের দেওয়ালঃ 
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত- গেইল তুরিনের ভূমিকা
যে নামেই ডাকা হোক না কেন- দেওয়াল, সীমান্ত-বেড়া, ইলেকট্রিক-কাঁটাতারের রেলিং, রাষ্ট্র যখন একটি দেশকে অন্য দেশ থেকে এই নির্মাণ দিয়ে বিচ্ছিন্ন করে, তখন বুঝতে হবে কুটনীতি ও আপোষ-মীমাংসার বিদেশ-নীতি ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে ,স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চরমপন্থা এই প্রতিবন্ধককে অস্বীকার করার পথ খুঁজে নেয়। মধ্যযুগ থেকে আজ পর্যন্ত দুটি দেশের মধ্যে এতো দেওয়াল, বেড়া, কাঁটাতারের রেলিং বসে নি কিংবা পুরনো প্রাচীরকে নতুন করে মজবুত করা হয় নি। তিন হাজার দুশো কিলোমিটার এই বিচ্ছিন্নতার দেওয়াল ভারতের উদ্যোগেই হয়েছে। যা স্থলভূমির সীমান্ত দিয়ে গোটা বাংলাদেশকে ঘিরে ধরেছে।কিছু কিছু সীমান্ত শহরে ইঁটের তৈরী পাচিলসহ ডবল উঁচু কাঁটাতার ও লোহার রেলিং এই দেওয়াল পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম। এই বর্ডার সীমান্ত অত্যন্ত কঠোর হাতে পাহারা দেয় ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স এবং বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড। শুধু বৃহত্তম নয় সবচেয়ে ভয়ঙ্করও বটে। গত দশ বছরের সরকারি তথ্য অনুযায়ী বলা যায়, প্রতি পাঁচ বছরে একজন মানুষ নিহত হয়েছে।বিএসেফের বিরুদ্ধে হিংস্র আচরণ, শারীরিক নিগ্রহ এবং নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে। তাদের শিকার প্রায় সবই বাংলাদেশি।এরা পারিবারিক,অর্থনৈতিক,অসহনীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং পরিবেশের কারণে সীমান্ত অতিক্রম করে থাকে।দেশের এই দুর্দশার জন্য তাদের কিভাবে দায়ী করা যাবে? যখন দেশ সব রকম দুঃখ দুর্দশায় ক্লিষ্ট! অপরিসীম দারিদ্র,ঘন জনাকীর্ণ বসতি, চূড়ান্ত রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রকৃতির ভয়াবহ দুর্বিপাক,... তালিকা দীর্ঘ ।
একটা উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন মানুষকে জীবনের ভয়ঙ্কর ঝুঁকি নিতে বাধ্য করে। যে দেওয়াল তারা ডিঙোতে চায় তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন একটি বাধাপ্রতীক যার অপসারণ তাদের একমাত্র কামনা।
মুল ফরাসি ভূমিকাঃ গেইল তুরিন,বেলজিয়া্ন চিত্রসাংবাদিক ও লেখক
তর্জমাঃ অসিত রায়

No comments:

Post a Comment