Saturday 30 April 2016

ক্যাপিটালিস্ট পার্টি অফ ইনডিয়া(মুনাফাবাজ)------বিশ্বেন্দু নন্দ

 ক্যাপিটালিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া(মুনাফাবাজ)
রাজনৈতিক ভাবে যে দলটাকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি সেটা হল সিপিএম।কেননা আপনারা মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।যে শতক একসময় দেশের জনগণকে নতুন কিছুর স্বপ্ন দেখিয়েছিল, আপনাদের সচেতন সোশ্যাল-ডেমোক্র্যাসির সুখের রাজনীতি সেই স্বপ্নের বুকে ছুরি চালিয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী খাদ্য-আন্দোলনের পর যে জনসমর্থন পেয়ে আপনারা ক্ষমতার মসনদে পৌঁছলেন, আশু-রিলিফের নামে যুক্তফ্রন্ট তৈরি করে গ্রাম-বাংলার খেটে-খাওয়া মানুষের আশা-আকাঙ্খাকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছেন আপনারা। "লালসেলাম" 'কমরেড' এই কথা গুলো একসময় মানুষকে সমাজ-পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখাতো, বিশ্বাস যোগাতো তা আজ বাংলা সিনেমার বিখ্যাত চুটকি তে পরিনত হয়েছে।মরিচঝাঁপি, নকশালবাড়ি, নন্দিগ্রাম,SEZ একের পর এক উদাহরণ দিলে ৫০০ পাতা ফুরিয়ে যাবে।তাপসী মালিক থেকে চুনি কোটাল আপনাদের বামপন্থায় জেন্ডার মুভমেন্ট নতুন মাত্রা পেয়েছিল!!রাষ্ট্রের সুবিধার্থে কিভাবে নিও-লিবেরাল ইকোনমি খুব সহজ উপায়ে লাগু করা যায় তা আপনাদের বামপন্থা শিখিয়ে দিয়েছে, দক্ষ শাসকের মতো । মার্কেট ইকোনমি আপনারা ঢেলে সাজিয়েছেন পুজির স্বার্থে। ছাত্র-ইউনিয়ন-গুলি নির্লজ্জ ভাবে আপনাদের অরাজনইতিক চর্চা,অপসংস্কৃতি এর জন্যে লুম্পেনকারী দের ঠেকে পরিনত হয়েছে। পাড়ায় পাড়ায় বাড়িভাড়া থেকে রাস্তার ড্রেন তৈরি প্রতিটি জায়গায় আপনাদের নির্লজ্জ দলতন্ত্র,মস্তানি, ক্ষমতার আস্ফালন দেখেছে সাধারণ মানুষ। আপনাদেরই যাবতীয় ধারাবাহিকতা নিয়ে এগিয়ে চলেছে তৃণমূল সরকার। আর একটা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিক্রিয়াশীল হলে কতটা ভয়ংকর জন-বিরোধী হয়ে উঠতে পারে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ সিপিএম।আপনারা টাটা- বিড়লা-অম্বানী দের সাথে হাতে হাত রেখে কমিউনিস্ট সুলভ মিটিং করেছেন(থুড়ি ব্যারিকেড গড়েছেন) শ্রমিকশ্রেণীর সুবিধার্থে!!!!আপনারা নয়া-উদারনীতির আকাশ-কুসুম মেকি উন্নয়নের বাজনা বাজিয়েছেন টাটাদের ন্যানো গাড়িতে চড়ে।আজ সিপিএম মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর দল, যার সাথে শ্রমিকশ্রেণীর তথা প্রলেতারিয়েত নিজস্ব রাজনৈতিক মুক্তির বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই... নন্দিগ্রামের গনহত্যার সমর্থনে যারা ডকুমেন্টারি বানিয়ে প্রচার চালান , বক্তব্য রাখেন তাদের কম্যুনিস্ট তো দুরের কথা বামপন্থী বলতেও ঘৃণা হয়।এই সিপিএম এর প্রচারে প্রেসিডেন্সির ছাত্র-পেটানো নেতা 'ঋদ্ধি'র আন্দবাজারিও মুখ সামনের সারিতে থাকে।ভোট শেষ হওয়ার আগেই আপনারা তাই থ্রেট দেন স্বাধীন ছাত্র-ছাত্রীদের। কারণ আপনারাও ভয় পান আসলে স্বাধীন ভাবনাকে, স্বাধীন চিন্তনকে।
হ্যাঁ আমি স্বাধীন।আমি স্বাধীন ছাত্র-ছাত্রী আন্দোলনে বিশ্বাসী। সমাজের প্রচলিত শাসকশ্রেণীর আচার-ব্যাবহার,নিয়ম-রীতির ভাবনার থেকে আমি স্বাধীন। মালিকশ্রেণীর দলের যাবতীয় সুবিধাবাদ থেকে স্বাধীন। 'গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার' নামে গণতন্ত্রকে খুন করে ফেলা পার্টির স্বৈরাচারী, একনায়কতন্ত্র ভূমিকা থেকে আমি স্বাধীন।আন্দোলনের নিত্য-নতুন ফর্মে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময় এটা। স্বাধীনভাবে( শাসকশ্রেণীর যাবতীয় দল ও চেতনা সংস্কৃতির বাইরে) ছাত্র-ছাত্রীদের সংগঠিত হওয়ার সময় এটা। বিকল্প-শক্তির খোঁজে নতুন আইডিয়ার জন্ম এভাবেই হয়। আমার কাছে পার্টি এমনই একটি আইডিয়া।সেই আইডিয়া কে কেন্দ্র করে কিছু মানুষ ঐক্যবদ্ধ সংঘবদ্ধ হওয়া, শাসকের উল্টোদিকে নতুনরূপে পরিবর্তনকামী শক্তির জন্ম দেওয়া।সেই শক্তি শোষিতের প্রতিরোধের শক্তি, পাল্টা লড়াই এর শক্তি।আমি মনে করি না সংগঠিত হওয়ার সমস্ত কাঠামোর মধ্যেই hierarchy এর জন্ম হয়, এই সিম্পল গোদা লজিকে।
আজকের এই সিপিএম ক্ষমতায় এলে আরও বেশি দম্ভ নিয়ে নামাবে রাষ্ট্রের সমস্ত দমনমূলক নীতি। এই সিপিএম হবে উগ্র শোষণের পক্ষে, আরও বেশি নয়া-উদারনীতির পক্ষে, আরও বেশি পুজির পক্ষে, আরও বেশি হয়ে উঠবে রাষ্ট্রযন্ত্রের পার্ট। সিপিএম বা তৃণমূল বা কংগ্রেস বা বিজেপি প্রতিটি রাষ্ট্রীয় শক্তির বিরুদ্ধে, শাসকশ্রেণীর দলের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা খেটে-খাওয়া মানুষেরা ঐক্যবদ্ধ হোক সংঘবদ্ধ হোক, নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে, ব্যাবস্থাটাকে পাল্টানোর স্বপ্ন নিয়ে।

No comments:

Post a Comment