Saturday 30 April 2016

কেন আমি সিপিএমকে তৃণমূলের চেয়ে বেশি আক্রমণ করি? ----------- মনোরঞ্জন ব্যাপারী

সেই বহু বছর ধরে একটা নিয়ম বা ভাবনা সর্বত্র চালু আছে -'' যে আমাদের দলে নয় সে ওদের দলে '' । অর্থাৎ আমরা ওঁরা বিভাজন । সেই নিয়মে যেহেতু আমি সিপিএম য়ের মরিচ ঝাঁপি গন হত্যা বা নকশাল বাড়ী থেকে নেতাই নিয়ে কোন কথা বলি '' তেনারা '' আমাকে দেগে দেন তৃণমূল বলে । ভাবনাটা এই রকম - যে তৃণমূল তাঁর সব কথা অসত্য। এটা করতে পারলে সব জবাব দিহির দায় থেকে পিঠ বাচাবার একটা ছুতো পাওয়া যায় ।
তবে যারা আমার নিকট জন সবাই জানেন আমি তৃণমূল নই ।আর আমি তৃণমূল হলে সেটা এত গোপনে হবোনা । সবার সামনে প্রকাশ্যে ওই দলের সদস্যতা নেব । কে আমাকে বাধা দেবে?
অনেকে বলছেন আমি কেন তৃণ মুলের বিরুদ্ধে কিছু বলি না - মানে যে ভাষায় সিপিএম কে বলি সেই ভাষায় কেন ওদের আক্রমন করি না । আমি স্বীকার করছি তা করি না । কারন আমার বলা বা লেখায় [ যদিও তা হবে না ] যদি তৃণমুলের একটাও ভোট কমে যায় - যদি সেই এক ভোটের কারনে সে ক্ষমতায় না আসতে পারে যারা ক্ষমতায় আসবে তাঁরা যে পৃথিবীর সব চেয়ে জঘন্য অত্যাচারী নিকৃষ্ট একটা দল । তাঁরা যে দুঃশাসন ইতিপুর্বে চালিয়ে বিদায় নিয়েছে আমার দেহ মনে - সমাজ জীবনে তাঁর দগদগে স্মৃতি যে আজো বর্তমান । কে তাদের দায়িত্ব নেবে যে তাঁরা ক্ষমতায় এলে আর এমন ঘটনা ঘটাবে না ? আমি কিছুতেই ভুলতে পারিনা সেই মানুষ গুলোকে যাদের দন্ডকারন্য থেকে এরাই ডেকে এনে চল্লিশ খানা লঞ্চ দিয়ে চার দিক থেকে ঘিরে নির্মম ভাবে হত্যা করে নৌকা করে নিয়ে গিয়ে সাগরের জলে ডুবিয়ে দিয়েছিল । ফেলে এসেছিল গভীর অরন্যে বাঘের খাদ্য হিসাবে । তাঁরা যে আমার আপন জন - আত্মীয় । - স্বজাতি দলিত দরিদ্র অসহায় ।
তৃণমূল নিয়ে আমারও অভিযোগ কম নেই ,১, সে তাঁর প্রতিশ্রতি পালন করেনি- রাজবন্দীদের আজও মুক্তি দেয়নি । আমাদের অতি প্রিয় আদিবাসী নেতা ছত্রধর মাহাত আজও জেলে পচছে । উচিৎ ছিল তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া ২ উচিৎ ছিল যারা দীর্ঘ ৩৪ বছর মানুষের উপর ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালিয়ে ছিল মরিচঝাপি থেকে নেতাই পর্যন্ত- আর পাড়ায় পাড়ায় যে ছোট ছোট মাস্তান গুন্ডা - তাদের ধরে জেলে ঢোকানো - বিচার করে সাজা দেওয়া । তা না করে সেই হার্মাদদের তাদের নিজের দলে ঢুকিয়েছে । আজ তাঁরা আগের মতই মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করছে । দলের পুরাতন তৃনমূলদেরই মারছে । ৩ দরকার ছিল ব্যাপক অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানো । তাহলে অন্তত মানুষ নির্ভয়ে পথে চলতে পারত । অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালালে সিপিএম সহ সব দলের দাগীরা বাংলা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হত । তাহলে অন্তত মমতা শান্তি ভাবে আরও কিছু উন্নয়নের কাজ করতে পারত । সে ক্ষমতায় বসা মাত্র মনিহারা ফনীরা পদে পদে যে বিরুদ্ধতা শুরু করে ছিল - তা পারত না । তাহলে আর আজ রাজপথে মমতার বিরুদ্ধে মিছিলে লোক পাওয়া যেত না । না আমি সারদা নিয়ে কিছু বলছি না । আমি সারদার আগে সঞ্চয়িতা দেখেছি কারা সেই চিট ফান্ডের মাধ্যমে লক্ষলক্ষ মানুষকে ঠকিয়ে কোন কৌশলে সঞ্চয়িতা কর্তাকে হাপিশ করেছিল তা আমাদের জানা । অপরাধ সেটাও- অপরাধ এটাও । এখানে কোন আমরা ওঁরা চলে না । কোন মানে নেই যে সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের হত্যা ধর্ষণ ন্যায় আর কামদুনি অন্যায় বলার । তবে আজ সেটাই হচ্ছে । সব অপরাধীর বিচার সাজা আর মানুষের ক্ষতি পুরন হওয়া দরকার ।
আর নারদা ? হাসতে হচ্ছে -। মাত্র ৯৫ লক্ষ টাকা ঘুস? এতেই ৯ জন কে ফাসানো গেল ! হ্যা ঘুষ নিলে সেটা অপরাধ । আর গোপন ক্যামেরায় ছবি থাকলে তো বলারই দরকার নেই । কিন্ত দাদা আমি যে সিপিএম দের সেই সব নেতা দের চিনি যারা ৪০/৪২ বছর আগে আমাদের কাছ থেকে বিড়ি চেয়ে খেত । আজ তাদের বিত্ত বৈভব কত হাজার কোটি টাকার ভাবলে মাথা ঘুরে যায় । কোথা থেকে এল এত টাকা ? সৎ পথের কামাইয়ে ? সত্যি হচ্ছে ভোটবাজ সব দলকেই এই ভাবে টাকা নিতে হয় । মনে নেই সুভাস চক্রবর্তীর সেই সদম্ভ সাহসিক উক্তি? দল চালাতে মিটিং মিছিল করতে ক্যাডার পুষতে এমন ঘুষ সবাই খায় । তবে ওই - গু খায় সব মাছ নাম হয় পাঙাশের । তবে এটা বলা যায় যে তৃণমূল নেতারা নির্বোধ । এত নির্বোধ যে চুরি করাটাও ঠিক মত শিখে ঊঠতে পারেনি । ছিচকে কর্মেই ধরা পড়ে যায় । আমাদের এটাই ভরসা- ওঁরা লাখ থেকে লাখ লাখে যাবার আগে ধরা পড়ে যাবে । অন্যরা - মানে ওদের সরিয়ে যাদের আনা হবে ,হাজার হজার কোটি গিলে ফেললেও কেঊ টেরটি পাবেনা । তাই আমার মনে হয় খুনি ডাকাত ধর্ষক দের চেয়ে ছিচকে চোর পকেট্মার কিছুটা ভাল । ডাকাত তো প্রান ধন সম্মান সব নেবে । ছিচকে চোর নেবে ছেড়া পুটুলি । যতদিন না মানুষের সত্যিকারের দরদী কোন দল গড়ে না ওঠে আমি চাই -যা চলছে তাই চলুক । আপাততঃ সেদিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর আমাদের কি করবার আছে?

No comments:

Post a Comment